-->

 বৈচিত্র্যময় এ পৃথিবীতে বাস করে অসংখ্য বৈচিত্র্যময় প্রাণী । পৃথিবীতে সব প্রাণী নিয়ে গঠিত হয়েছে প্রাণিজগত (Animal kingdom) । এসব প্রাণিদের আকার, আকৃতি, বর্ণ, স্বভাব, বাসস্থান, চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য, অভ্যন্তরীণ গঠন, খাদ্যাভ্যাস, জনন প্রক্রিয়া ইত্যাদির মধ্যে নানান পার্থক্য লক্ষ করা যায় ।

১৮৭৩ সালে বিজ্ঞানী হেকেল (Haeckel) সমগ্র প্রাণিজগতকে প্রোটোজোয়া (Protozoa) ও মেটাজোয়া (Metozoa) এ দুভাগে ভাগ করেন বহু বছর ধরে Protozoa কে পর্বের মর্যাদা দেয়া হতো ১৯৬৯ সালে আর.এইচ. হুইটেকার (R. H. Whittaker) জীবের ৫ রাজ্য শ্রেণিবিন্যাস (Five kingdom classification)-এর প্রবর্তন করেন । রাজ্যগুলো হলো- ১. Monera, 2. Protista, 3. Fungi, 8. Plantae ও ৫. Animalia. এ শ্রেণিবিন্যাস অনুযায়ী ব্যাকটেরিয়া, নিলাভ সবুজ শৈবাল মনেরা রাজ্যের, Protozoan-দের প্রোটিস্টা রাজ্যের সদস্য হিসেবে গণ্য করা হয় । নিউক্লিয়ার আবরণীযুক্ত টিস্যুবিহীন সকল এককোষী জীব প্রোটিস্টা রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত। যেমন-শৈবাল, স্লাইমমোল্ড প্রভৃতি । সকল ছত্রাক ফানজাই রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত, বহুকোষী শৈবাল ও সকল উদ্ভিদ প্লান্টি রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ।

সকল বহুকোষী প্রাণী (metazoa) যারা খাদ্য গলাধঃকরণ করে ও অভ্যন্তরীণভাবে পরিপাক করে এবং কিছু পরজীবী যারা শোষণের মাধ্যমে পুষ্টি সংগ্রহ করে তাদের রাজ্য অ্যানিম্যালিয়া । প্রাণিজগতের সদস্যদের বর্তমানে প্রায় ৩৩ পর্বের তালিকাভুক্ত করা হয়েছে । পর্বগুলোকে সাধারণভাবে Major Phyla ও Minor Phyla এ দুভাগে অন্তর্ভুক্ত করা হয়।

শ্রেণিবিন্যাসের নীতি (Principles of Animal Classification):

শ্রেণিবিন্যাস একটি সুসংঘবদ্ধ বিজ্ঞান।খুঁটিনাটি অনেক নীতি মেনে শ্রেণিবিন্যাস সম্পন্ন করতে হয় নিচে প্রধান নীতিগুলোর সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা দেয়া হলো ।

১. শ্রেণিবদ্ধগত বৈশিষ্ট্য (Taxonomic character) নির্ধারণ:

যে বৈশিষ্ট্য একটি ট্যাক্সন-সদস্যকে অন্য ট্যাক্সন (শ্রেণিবদ্ধগত একক) থেকে পৃথক করতে পারে বা পৃথক করার সম্ভাবনা দেখাতে পারে সেটি ঐ ট্যাক্সনের শ্রেণিবদ্ধগত বৈশিষ্ট্য আধুনিক গবেষণায়, শ্রেণিবদ্ধগত বৈশিষ্ট্য বলতে ট্যাক্সন-সদস্যদের অঙ্গসংস্থানিক, রাসায়নিক, শারীরবৃত্তিক, জিনগত, জননগত বা বাস্তুসংস্থানিক বৈশিষ্ট্যকে বুঝায় । শ্রেণিবিন্যাসের সময় প্রত্যেক ধাপে অন্তর্ভুক্ত ট্যাক্সনের শনাক্তকারী শ্রেণিবদ্ধগত বৈশিষ্ট্যাবলির উল্লেখ করতে হয়।

২. শনাক্তকরণ (Identification):

শ্রেণিবদ্ধগত বৈশিষ্ট্যের আলোকে পর্যবেক্ষণে থাকা কোনো ট্যাক্সন-সদস্য পরিচিত বা আগে বর্ণিত হয়েছে এমন হতে পারে, কিংবা অপরিচিতও হতে পারে। তার অর্থ এই নয় যে, এটি একটি নতুন ট্যাক্সন এভাবে শ্রেণিকরণের উদ্দেশে সংগৃহীত যে কোনো নমুনা নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করে সম্পর্কযুক্ত অন্যান্য প্রাণীর প্রকাশিত বর্ণনার সাথে তুলনামূলক আলোচনা সাপেক্ষে ক্যাটাগরিকরণ সম্পন্ন করতে হয়।

৩. ক্যাটাগরিকরণ বা র‍্যাংকভুক্তি (Categorization or Ranking):

যেসব প্রাণী বা প্রাণিগোষ্ঠীকে শ্রেণিবিন্যাসের উদ্দেশে বিভিন্ন ধাপ অর্থাৎ ক্যাটাগরি বা র‍্যাংক-এর অন্তর্ভুক্ত করা হয় সে সব প্রাণিগোষ্ঠীকে ট্যাক্সন (taxon; বহুবচনে taxa) বলে।ট্যাক্সন হচ্ছে শ্রেণিবদ্ধগত একক (taxonomic unit)। অর্থাৎ শ্রেণিবিন্যাসে ব্যবহৃত প্রতিটি ক্যাটাগরিভুক্ত (র‍্যাংকভুক্ত) প্রাণীর জনগোষ্ঠী বা জনগোষ্ঠীবর্গকে একেকটি ট্যাক্সন বলে যেমন-Animalia, Chordata, Mammalia, Primates, Hominidae, Homo, Homo sapiens একেকটি ট্যাক্সন বিবর্তনিকভাবে সম্পর্কিত এবং অভিন্ন বৈশিষ্ট্যাবলি বহনকারী প্রাণিগুলো (ট্যাক্সন)-কে একেকটি শ্রেণিবদ্ধগত ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। জীবজগতের শ্রেণিবিন্যাসে ব্যবহৃত বিভিন্ন ট্যাক্সোনমিক ক্যাটাগরি বা ধাপ যা একটির উপর আরেকটিকে বিন্যস্ত করা হয়েছে, এগুলোকে একত্রে হায়ারার্কি (hierarchy) বলে । হায়ারার্কি জীবগুলোর মধ্যে বিভিন্ন মাত্রার আত্মীয়তার সম্পর্ক নির্দেশ করে হায়ারার্কিতে অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন ক্যাটাগরির অবস্থান যত কাছাকাছি হয় তাদের জীবসমূহের চারিত্রিক মিল তত বেশি হয় ।

 শ্রেণিবিন্যাসের আবশ্যিক (mandatory) ধাপ (র‍্যাংক বা ক্যাটাগরি) হচ্ছে ৭টি, যথা:- Kingdom, Phylum, Class, Order, Family, Genus ও Species কোনো প্রাণীর শ্রেণিবিন্যাস করতে গেলে সেই প্রাণীকে যেসব ক্যাটাগরি বা ধাপের প্রত্যেকটিতে স্থাপন না করলে শ্রেণিবিন্যাস অসম্পূর্ণ থাকবে সে ধাপগুলোকে আবশ্যিক ধাপ বলে।

Species (প্রজাতি) : শ্রেণিবিন্যাসের মূল বা ভিত্তি একক হচ্ছে প্রজাতি । Earnst Mayr (1969) এর মতে -“প্রাকৃতিক পরিবেশে কোনো জীবগোষ্ঠী যদি নিজেদের মধ্যে যৌন মিলন ঘটিয়ে জননক্ষম সন্তান উৎপাদনে সক্ষম হয় কিন্তু অন্য কোনো গোষ্ঠীর সাথে প্রজননগতভাবে বিচ্ছিন্ন বা আলাদা থাকে তখন ঐ ধরনের জীবগোষ্ঠীকে প্রজাতি বলে।” যেমন- পৃথিবীর সকল মানুষ, বানর, ব্যাঙ, আম, কাঁঠাল গাছ একেকটি প্রজাতির অন্তর্গত।

Genus (গণ) : গণ শ্রেণিবিন্যাসের সেই সামষ্টিক একক যার মধ্যে একই ধরনের বা সম্বন্ধযুক্ত একাধিক প্রজাতি অন্তর্ভুক্ত থাকে । প্রাণীর গণ নির্ধারনে ক্রোমোজোমের সংখ্যা, আকার ও প্রকার এর বৈশিষ্ট্য ভূমিকা রাখলেও এর সব বৈশিষ্ট্যই অভিযোজনের সঙ্গে সম্পর্কিত । এর বিস্তার একটি বা কয়েকটি অঞ্চলে সীমাবদ্ধ ।

Family (গোত্র) : শ্রেণিবিন্যাসের এ স্তরে একই পূর্বপুরুষ থেকে উদ্ভূত এক বা একাধিক গণ অন্তর্ভুক্ত থাকে । এর বিস্তার বিশ্বব্যাপী । লিনিয়াস ‘গোত্র' কে শ্রেণিবিন্যাসের স্তর হিসেবে স্বীকৃতি দেননি। এটি পরবর্তীতে প্রয়োজন অনুসারে ধাপ হিসেবে যুক্ত হয়েছে । Order (বর্গ) : বর্গ শ্রেণিবিন্যাসের এমন একটি স্তর যা এক বা একাধিক গোত্রের সমন্বয়ে গঠিত। এটিও স্বাভাবিকভাবেই বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত।

Class (শ্রেণি) : শ্রেণিবিন্যাসের বর্গ পরবর্তী উচ্চতর স্তরটি হলো শ্রেণি যাতে একাধিক বর্গ অবস্থান নেয় । এর আকার ও গঠন নিয়ে অনেক শ্রেণিতত্ত্ববিদদের মধ্যে অনেক মতপার্থক্য দেখা যায় প্রাণীর দেহের অঙ্গসংস্থানিক বৈশিষ্ট্য, অভিযোজনিক বিচ্ছুরণ, অভিব্যক্তিক ধারা অনুসারে শ্রেণিসমূহের মধ্যে বিভাজন করা হয় ।

Phylum (পর্ব) : শ্রেণিবিন্যাসের সর্বোচ্চ স্তর হলো পর্ব একটি পর্ব কয়েকটি শ্রেণি নিয়ে গঠিত হয় একটি পর্ব থেকে অন্য পর্বের পার্থক্য খুবই স্পষ্ট হয় কেননা-দৃশ্যমান ও সুনির্দিষ্ট কিছু মৌলিক বৈশিষ্ট্যের উপর ভিত্তি করে পর্ব নির্ধারণ করা হয় ।

Kingdom (রাজ্য) : এটি প্রাণী শ্রেণিবিন্যাসের সার্বজনীন স্তর অর্থাৎ এ স্তরটিতে পৃথিবীর সকল প্রাণীকে (প্রাণীর বৈশিষ্ট্য থাকা সাপেক্ষে) অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে । 

৪. নামকরণ (Nomenclature):

একটি প্রাণীকে পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাষায় ভিন্ন ভিন্ন নামে ডাকা হয় এতে বৈজ্ঞানিক গবেষণা কাজে জটিলতা সৃষ্টি হয় । এ সমস্যা দূরীকরণের জন্য প্রবর্তন করা হয়েছে প্রাণীর নামকরণের বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির। কোন বিশেষ প্রাণীকে শনাক্তকরণের জন্য শ্রেণিবিন্যাসের কিছু নিয়মকানুন ও পদ্ধতি অনুসারে প্রাণীর প্রতিটি প্রজাতির যে বিশেষ নাম প্রদান করা হয় তাকে নামকরণ বলে প্রাণীর নামকরণ দুধরনের হতে পারে, যেমন- ক. দ্বিপদ নামকরণ ও খ. ত্রিপদ নামকরণ।

ক. দ্বিপদ নামকরণ (Binomial Nomenclature) : জীবের নামকরণের আন্তর্জাতিক নিয়মানুযায়ী গণ ও প্রজাতি নামের দুটি পদ ব্যবহার করে প্রাণিদের যে নামকরণ করা হয় তাকে দ্বিপদ নামকরণ বলে এভাবে সৃষ্ট নামকে প্রাণীর বৈজ্ঞানিক নাম (scientific name) বলা হয়। সুইডিশ শ্রেণিতত্ত্ববিদ Carolus Linnaeus ১৭৫৮ খ্রিস্টাব্দে দ্বিপদ নামকরণ পদ্ধতির প্রবর্তন করেন। দ্বিপদ নামকরণের নিয়মানুযায়ী মানুষের বৈজ্ঞানিক নাম Homo sapiens এখানে Homo গণ এবং sapiens প্রজাতি নামের নির্দেশক ।

খ. ত্রিপদ নামকরণ (Tri-nomial Nomenclature ) :

অনেক সময় একটি প্রজাতির সদস্যদের মধ্যে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য অঙ্গসংস্থানিক পার্থক্য দেখা যায় সে সব সদস্যকে তখন ঐ নির্দিষ্ট প্রজাতির উপপ্রজাতি (sub species) হিসেবে গণ্য করা হয় তখন গণ ও প্রজাতি সমন্বিত দ্বিপদ নামটি উপপ্রজাতিসহ ত্রিপদ।

দ্বিপদ নামকরণের নিয়মাবলি (Rules of Binomial Nomenclature):

কোনো জীবের নামকরণ পদ্ধতি অত্যন্ত জটিল এবং তা কতকগুলো নিয়ম মেনে সমাধান করা হয়। প্রাণীর নামকরণের নিয়মগুলো প্রাণী নামকরণের আন্তর্জাতিক সংস্থা International Commission on Zoological Nomenclature (ICZN) প্রণয়ন করে থাকে এবং নিয়মগুলো International Code of Zoological Nomenclature-এ লিপিবদ্ধ করা হয় ।

নিচে দ্বিপদ নামকরণের নিয়মাবলি উলেখ করা হলো:

১. প্রাণিজগতে প্ৰত্যেক ট্যাক্সনের একটি স্বীকৃত বৈজ্ঞানিক নাম থাকবে ।

২. দুটি ল্যাটিন বা ল্যাটিনকৃত শব্দ নিয়ে দ্বিপদ নামকরণের মাধ্যমে “বৈজ্ঞানিক নাম” গঠিত হবে । 

৩. প্রত্যেক দ্বিপদ নামের প্রথম পদটি (অংশটি) হচ্ছে গণ নাম (generic name) দ্বিতীয় পদটি প্রজাতিক নাম (specific name)।যেমন- বাঘের গণ নাম হচ্ছে Panthera, প্রজাতিক নাম tigris । 

৪. গণ নামটি হচ্ছে বিশেষ্য (noun) বা জাতিবাচক (generic) তাই এর প্রথম অক্ষরটি শুরু হবে বড় হাতের অক্ষর দিয়ে, যেমন-Panthera 

৫. প্রজাতিক নামটি বিশেষণ (adjective) বা গুণবাচক (qualifier) তাই এর প্রথম অক্ষরসহ প্রতিটি অক্ষর হবে ছোট হাতের অক্ষর, যেমন-tigris

৬. দ্বিপদ নাম ছাপা অক্ষরে হলে সবসময় ইটালিকস অক্ষরে (অর্থাৎ ডান পাশে হেলানো) হবে, যেমন-Panthera tigris.

৭. দ্বিপদ নাম হাতে লিখলে ইংরেজি অক্ষর ব্যবহার করতে হবে এবং প্রত্যেক অংশের নিচে (একটি গণ, অন্যটি প্রজাতি) আলাদা আলাদাভাবে দাগ টেনে দিতে হবে। যেমন- Panthera tigris।  অতএব, কোনো অবস্থায়ই বাংলা হরফে বৈজ্ঞানিক নাম লেখা যাবে না ।

৮. সবার কাছে লভ্য ও স্থায়ী বৈজ্ঞানিক রেকর্ড হিসেবে বিনামূল্যে বা অর্থমূল্যে পাওয়া যাবে এমন প্রকাশনায় (জার্নাল ইত্যাদি) বা ICZN-এ নির্দেশিত অন্যান্য মাধ্যমে দ্বিপদ নামের প্রকাশনায় থাকতে হবে।

৯. যে বিজ্ঞানী সর্বপ্রথম কোনো প্রাণীর সঠিক বর্ণনাসহ দ্বিপদ নাম প্রকাশ করবেন তাঁর নাম উক্ত প্রাণীর দ্বিপদ নামের শেষে যুক্ত হবে । যেমন- কার্পু বা কার্পিও মাছ, Cyprinus carpio Linnaeus, 1758 ।

১০. প্রতিনাম (synonyms) বা সমনামের (homonyms) ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার আইন (law of priority) অবশ্যই পালন করতে হবে।

১১. কোনো কারণে প্রাণীর গণ নামের পরিবর্তন হলে এর প্রথম জনকের নাম বন্ধনীর মধ্যে উল্লেখ করতে হবে। যেমন, লিনিয়াস বাঘের বৈজ্ঞানিক নামকরণ করেন Felis tigris যা পরবর্তীতে Panthera tigris হিসেবে পরিবর্তিত হয় । বর্তমানে বাঘের বৈজ্ঞানিক নাম Panthera tigris (L) হিসেবে লেখা হয়।

১২. কোনো প্রাণীর বৈজ্ঞানিক নামের গণ ও প্রজাতি অংশের নাম একই হতে পারে । যেমন,Catla catla. এ অবস্থাকে টটোনিম (tautonym) বলে।

১৩. নামকরণের সময় যে প্রাণীকে নমুনা হিসেবে ব্যবহার করা হবে তাকে টাইপ স্পেসিমেন (type specimen) হিসেবে গবেষণাগারে সংরক্ষণ করতে হবে।

প্রাণীর শ্রেণিবিন্যাসের প্রয়োজনীয়তা (Necessity of Animal Classification) :

তত্ত্বীয় ও ফলিত উভয় জীববিজ্ঞানেই শ্রেণিবিন্যাসের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।

তত্ত্বীয় প্রয়োজনীয়তা:

১. শ্রেণিবিন্যাসের মাধ্যমে কোনো প্রাণিগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত একটি প্রাণী সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করলে ঐ গোষ্ঠীর অন্যান্য প্রাণী সম্বন্ধে ধারণা জন্মে।

২. কম পরিশ্রম ও অল্প সময়ের মধ্যে প্রাণিজগতের অনেক সদস্য সম্পর্কে জানা ও শেখা যায় ।

৩. প্রাণিকূলের পারস্পরিক সম্পর্ক বা জাতিজনির বিভিন্ন তথ্য পাওয়া যায়।

৪. প্রাণিকূলের বিবর্তনিক ধারা নির্ণয়ে শ্রেণিবিন্যাস সাহায্য করে।

৫. নতুন প্রজাতি শনাক্ত করতে শ্রেণিবিন্যাস অপরিহার্য।

ফলিত প্রয়োজনীয়তা:

৬. জনস্বাস্থ্য, কৃষি ও বনের ক্ষতিকর প্রজাতি দমনের উদ্দেশে শ্রেণিবিন্যাস নির্দিষ্ট প্রজাতির সঠিক পরিচয় দান করে।

৭. শ্রেণিবিন্যাসের মাধ্যমে অর্থনৈতিক গুরুত্বসম্পন্ন প্রাণী বাছাই করা যায়।

৮. বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে সাহায্য করে।

৯. ভূতাত্ত্বিক ঘটনাবলির নিখুঁত চিত্র তুলে ধরতে জীবজগতের শ্রেণিবিন্যাসের সাহায্য প্রয়োজন । ১০.কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে উন্নত জাতের পশুপাখি উদ্ভাবন সহজতর হয়।

-->