-->

 প্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, আমরা এই প্রশ্ন টা পর্যায় সারণির অধ্যায় থেকে প্রায়ই আসতে দেখি,"ইলেকট্রন বিন্যাস কে পর্যায় সারণির মূলভিত্তি কেন বলা হয় তা ব্যাখ্যা কর।" 

এটা একটা সুপারস্টার প্রশ্ন এবং এর উত্তর টাও আমাদের ভালোভাবে শিখে রাখতে হবে।আজ আমি উত্তর টা নিয়ে আলোচনা করছি।তোমরা অবশ্যই এটি মনোযোগ দিয়ে পড়বে এবং শেয়ার করে তোমার বন্ধুদের ও পড়তে দেবে।কোনো প্রশ্ন থাকলে বা আরো তথ্য থাকলে কমেন্টে লিখে জানাবে।আমি সাধ্যমত উত্তর দিতে চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ। 

প্রথমেই আমাদের জানতে হবে যে রাশান বিজ্ঞানী দিমিত্রি মেন্ডেলিফ কে আধুনিক পর্যায় সারণির জনক বলে।তিনি 1869 সালে পর্যায় সূত্র প্রদান করেন।মেন্ডেলিফের পর্যায় সূত্রটি হল : মৌলসমূহের ভৌত  এবং রাসায়নিক ধর্মাবলি তাদের পারমাণবিক ভর বৃদ্ধির সাথে সাথে পর্যায়ক্রমে আবর্তিত হয়।মেন্ডেলিফ এই সূত্রানুযায়ী তখন পর্যন্ত আবিষ্কৃত 63 টি এবং অনাবিষ্কৃত 4টি মৌল নিয়ে পর্যায় সারণি তৈরি করেন যাতে 8টা গ্রুপ আর 12 টা পর্যায় ছিল।অনাবিষ্কৃত মৌল গুলো সম্পর্কে তিনি ভবিষ্যৎবাণী করেছিলেন এবং পরে সেগুলো আবিষ্কৃত হয়েছিল।তাঁর নাম অনুসারে পর্যায় সারণিতে একটি মৌলের নাম মেন্ডেলেভিয়াম রাখা হয়।

আরো দেখুন : EMR বর্ণালির বিভিন্ন অঞ্চলের ব্যবহার- একের ভিতর সব প্রস্তুতি

মেন্ডেলিফের পর্যায় সারণির ত্রুটিঃ

1. তিন জোড়া মৌলের অবস্থানগত সমস্যা।এগুলো হলো: K ও Ar, Co ও Ni এবং I ও Te। মেন্ডেলিফের পর্যায় সূত্র অনুসারে পটাশিয়ামের (পারমাণবিক ভর 39) বসার কথা ছিল আর্গনের (পারমাণবিক ভর 40)আগে কিন্তু নিষ্ক্রিয় গ্যাসের ধর্মের সাথে মিল করানোর জন্য আর্গন কে পটাশিয়াম এর আগে বসানো হয়েছিল।আর দুজোড়া মৌলের ক্ষেত্রেও এরূপ ঘটেছিল। 

2. হাইড্রোজেনের অবস্থানগত সমস্যা।H এর ধর্ম ধাতুর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং হ্যালোজেনের ধর্মের সাথেও সাদৃশ্য রয়েছে। তাই H এর অবস্থানের সুনির্দিষ্টতা উল্লেখ করা হয়নি।

3.মেন্ডেলিফের পর্যায় সারণিতে ধাতু ও অধাতুর মধ্যে পার্থক্য দেখানো হয়নি।

4.মেন্ডেলিফ সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী মৌলসমূহকে একই গ্রুপে (যেমন ধাতু ও মুদ্রা ধাতু একসাথে) স্থান দিয়েছিলেন অথচ পর্যায় সারণির একই গ্রুপে অবস্থিত মৌলসমূহের ভৌত ও রাসায়নিক ধর্মাবলি একই ধরনের হয়।

5. মেন্ডেলিফের পর্যায় সারণিতে নিষ্ক্রিয় গ্যাসের কোনো উল্লেখ ছিল না। পরবর্তীতে মোসলে সব নিষ্ক্রিয় গ্যাসকে একটি শ্রেণিভুক্ত করেন এবং এর নাম দেন শূন্য শ্রেণি।

1913 সালে বিজ্ঞানী হেনরি মোসলে পারমাণবিক সংখ্যা আবিষ্কার করেন। পারমাণবিক সংখ্যা অনুসারে মৌলগুলো সাজালে মেন্ডেলিফের, পর্যায় সারণির ত্রুটি সংশোধিত হয়। কিন্তু কেন 1 নং পর্যায়ে 2টি মৌল, 2 ও 3 নং পর্যায়ে 8টি করে, 4 ও 5 নং পর্যায়ে 18 টি করে এবং 6 ও 7 নং পর্যায়ে 32 টি করে মৌল অবস্থান করে তা পর্যায় সূত্র থেকে ব্যাখ্যা করা যায় না। 

তাই প্রয়োজন পড়ে ইলেকট্রন বিন্যাসের এবং একেই পর্যায় সারণির মূল ভিত্তি ধরা হয়।ইলেকট্রন বিন্যাসের মাধ্যমে পর্যায় সারণিতে একটি মৌলের অবস্থান নির্ণয় করা যায়।যেসব মৌল একই ধরনের তারা একই গ্রুপে অবস্থান করে।তাই একটা মৌলের ধর্ম জানলে এর গ্রুপের অন্যান্য মৌল সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।

-->