-->

প্রিয় বন্ধুরা,পর্যায় সারণির একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো অবস্থান্তর মৌল।যেসব d ব্লক মৌলের সুস্থিত আয়নে d অরবিটাল আংশিক ভাবে পূর্ণ থাকে তাদের অবস্থান্তর মৌল বা অবস্থান্তর ধাতু বলে।এরা পর্যায় সারণিতে গ্রুপ 3 থেকে গ্রুপ 12 পর্যন্ত অবস্থিত।আজকের লেখায় অবস্থান্তর ধাতু সম্পর্কে অনেক তথ্য থাকবে।

তোমরা অবশ্যই এটি মনোযোগ দিয়ে পড়বে এবং শেয়ার করে তোমার বন্ধুদের ও পড়তে দেবে।কোনো প্রশ্ন থাকলে বা আরো তথ্য থাকলে কমেন্টে লিখে জানাবে।আমি সাধ্যমত উত্তর দিতে চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।এ লেখায় আমরা অবস্থান্তর ধাতুর দুটি বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা করবো। অবস্থান্তর ধাতুগুলোর ৪টি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ রাসায়নিক ধৰ্ম আছে।

১. অবস্থান্তর ধাতুর জারণ অবস্থা পরিবর্তনশীল। যেমন Fe এর জারণ অবস্থা +2 এবং + 3: FeO, Fe2O3

 ২. এরা জটিল যৌগ গঠন করে। যেমন K4[Fe(CN)6],

[Cu(NH3)4]SO4।

৩. অবস্থান্তর ধাতুসমূহের যৌগ রঙিন হয়। যেমন NiSO4 -সবুজ,  Fe(OH)3 -বাদামি

৪. অবস্থান্তর ধাতু এবং তাদের যৌগ প্রভাবক হিসেবে কাজ করে।H2SO4 উৎপাদনের স্পর্শপ্রণালিতে ভ্যানাডিয়াম পেন্টা অক্সাইড প্রভাবক। আমাদের পরিচিত অনেক বিকারক বিভিন্ন অবস্থান্তর ধাতুর জটিল যৌগ। যেমন- ফেহলিং দ্রবণ পটাশিয়াম এবং টলেন বিকারক সিলভারের একটি জটিল যৌগ।

ইলেকট্রন বিন্যাস নিয়ে অবশ্যই যেটি জানতে হবে

অবস্থান্তর ধাতু কেন জটিল যৌগ গঠন করে?

 সিজউইকের ইলেকট্রনীয় মতবাদ জটিল যৌগের উৎপত্তির মূল ধারণা দেয়। জটিল যৌগের গঠন ও এর বৈশিষ্ট্যপূর্ণ দিক ব্যাখ্যার জন্য এ সম্পর্কে কয়েকটি মতবাদ উপস্থাপিত হয়েছে। যথা—

1.যোজ্যতা বন্ধন মতবাদ (Valence Bond Theory, VBT)

2.আণবিক অরবিটাল মতবাদ (Molecular Orbital Theory, MOT)

3.ক্রিস্টাল ফিল্ড মতবাদ (Crystal Field Theory, CFT) 4.লিগাল্ড ফিল্ড মতবাদ (Ligand Field Theory, LET)

d-ব্লক মৌল বা সুনির্দিষ্টভাবে অবস্থান্তর ধাতুসমূহই মূলত জটিল যৌগ গঠন করে। এর একাধিক কারণ আছে।

১. অবস্থান্তর ধাতুর আয়নসমূহের বহিঃস্তরে ফাঁকা d অরবিটাল থাকায় প্রতিটি লিগাল্ড থেকে 1 জোড়া করে অব্যবহৃত ইলেকট্রন ফাঁকা অরবিটালে গৃহীত হয়। ফলে যোজ্যতা বন্ধন মতবাদ অনুসারে অবস্থান্তর ধাতুর আয়নের সঙ্গে একাধিক লিগান্ড সন্নিবেশ বন্ধন দ্বারা যুক্ত হয়ে জটিল যৌগ গঠন করে। এজন্য শুধুমাত্র অবস্থান্তর ধাতুসমূহই জটিল যৌগ গঠনে সক্ষম।

২. অবস্থান্তর ধাতুরই পরমাণুর বহিঃস্থ সমশক্তির ডিজেনারেট d অরবিটালগুলো নিকটবর্তী s ও p অরবিটালের এর সঙ্গে মিলে সমশক্তির সংকর অরবিটাল গঠন করতে পারে।

৩. অবস্থান্তর ধাতুসমূহের ক্যাটায়নের উচ্চ চার্জ ঘনত্বের কারণে এরা লিগান্ডের মুক্ত ইলেকট্রন জোড়কে সহজে টেনে নিয়ে সন্নিবেশ বন্ধন গঠন করতে পারে।

Earn $401 by browsing!!

৪. আবার অবস্থান্তর ধাতুসমূহ পরিবর্তনশীল জারণ অবস্থা দেখাতে পারে বলে জারণ অবস্থার পরিবর্তনের জন্য লিগান্ড থেকে সহজে ইলেকট্রনযুগল গ্রহণ করে সন্নিবেশ বন্ধন দ্বারা যুক্ত হতে পারে।

চৌম্বক ধর্মঃ

যে সকল পদার্থ চুম্বকক্ষেত্র দ্বারা প্রবলভাবে আকর্ষিত হয় তাদেরকে ফেরোম্যাগনেটিক পদার্থ বলে। আর যে সকল পদার্থ চুম্বকক্ষেত্র দ্বারা দুর্বলভাবে আকর্ষিত হয় তাদেরকে প্যারাম্যাগনেটিক এবং যে সমস্ত পদার্থ চুম্বকক্ষেত্র দ্বারা আকর্ষিত হয় না বরং বিকর্ষিত হয় তাদেরকে ডায়াম্যাগনেটিক পদার্থ বলে। ম্যাগনেটিক ধর্মের মূল কারণ হলো, পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাসে যুগ্ম বা অযুগ্ম সংখ্যায় ইলেকট্রনের অবস্থান। যদি কোনো মৌলের পরমাণুতে অযুগ্ম বা বিজোড় সংখ্যায় ইলেকট্রন থাকে তা হলে নিজ অক্ষে ইলেকট্রনের একমুখী ঘূর্ণনের কারণে ম্যাগনেটিক মোমেন্টের সৃষ্টি হয় অর্থাৎ চৌম্বক ধর্ম প্রাপ্ত হয়। ফলে মৌলটি চুম্বকক্ষেত্র দ্বারা আকৃষ্ট হয়। আবার কোন মৌলের পরমাণুতে যুগল ইলেকট্রন থাকলে ইলেকট্রনদ্বয়ের বিপরীতমুখী স্পিন পরস্পরকে প্রশমিত করে ফেলে। ফলে সেসব মৌলে ম্যাগনেটিক মোমেন্ট সৃষ্টি হয় না। তাই চৌম্বক ধর্ম থাকে না।

যে মৌলের পরমাণুতে যত বেশি সংখ্যক অযুগল ইলেকট্রন থাকে সে মৌল চুম্বক দ্বারা তত বেশি আকৃষ্ট হয় অর্থাৎ তত বেশি প্যারাম্যাগনেটিক বা প্যারাচুম্বকীয়। অবস্থান্তর ধাতুর পরমাণুর ইলেকট্রন বিন্যাসে দেখা যায় এদের প্রায় সবগুলোর d অরবিটালে অযুগল ইলেকট্রন আছে (Hund এর সূত্রানুসারে)। তাই এদের প্রায় সবগুলোই প্যারাম্যাগনেটিক বা ফেরোম্যাগনেটিক। তবে 3d-অবস্থান্তর ধাতুগুলোর মধ্যে আয়রন পরমাণুতে সর্বোচ্চ ৪টি অযুগল ইলেকট্রন থাকে। তাই আয়রনের সর্বোচ্চ ম্যাগনেটিক মোমেন্ট উৎপন্ন হয় বলে আয়রন সর্বাধিক চৌম্বক ধর্মের অধিকারী তথা ফেরোম্যাগনেটিক। Cr এবং Mn পরমাণুতে সর্বোচ্চ ৫টি অযুগল ইলেকট্রন থাকলেও এ সবকটি ইলেকট্রন একমুখী স্পিনে থাকায় ইলেকট্রনীয় কাঠামোটি প্রতিসম তথা স্থিতিশীল হয়। তাই অযুগল ইলেকট্রনের প্রাপ্যতা কমে যায়। ফলে ম্যাগনেটিক মোমেন্ট সৃষ্টি হয় না বলে Cr ও Mn এর চৌম্বক ধর্মও থাকে না ।

Ti ও V পরমাণুতে অযুগল ইলেকট্রন যথাক্রমে ২টি ও ৩টি, তাই এ দুটো মৌলের পরমাণুতে ম্যাগনেটিক মোমেন্ট সৃষ্টি হয়। এজন্য Ti ও V প্যারাম্যাগনেটিক ধর্মের অধিকারী। কিন্তু জিংক ধাতু ডায়াম্যাগনেটিক। কারণ জিংক ধাতুর d অরবিটাল ইলেকট্রনপূর্ণ থাকে (d10) অর্থাৎ অযুগ্ম ইলেকট্রন থাকে না।

জেনে নাও MRI এর এই তথ্যগুলো

দেখে নাও অবস্থান্তর মৌল নিয়ে একটি লেকচার!

মাত্র ৫০ দিনে এসএসসির প্রস্তুতি

-->