প্রিয় শিক্ষার্থীরা,অনেকসময় এরকম প্রশ্ন করা হয় যে,প্রাণীজগতের প্রথম ও দ্বিতীয় বৃহত্তম পর্বের তুলনা কর।এখানে উল্লেখ্য যে,তুলনা বলতে মিল ও অমিল দুটিকেই বোঝায়।আমরা জানি,প্রাণিজগতের 33 টি পর্বের মধ্যে Arthropoda বৃহত্তম এবং Mollusca এর স্থান এর পরেই।
Phylum পরিচিতি:Arthropoda
Arthropoda হচ্ছে প্রাণিজগতের বৃহত্তম পর্ব। এপর্যন্ত নথিভুক্ত পৃথিবীর তিন-চতুর্থাংশ প্রাণী এ পর্বের অন্তর্গত।শুধু সংখ্যাগত দিক থেকে নয়, দেহগঠন, বর্ণময়তা, বসতি, স্বভাব প্রভৃতি বৈচিত্র্যেও এসব প্রজাতি অনন্য অবস্থান দখল করে আছে। পৃথিবীর নদী-নালা, খাল-বিল, পাহাড়-পর্বত, সমুদ্র মোহনা, বরফ-মরুজ এমন কোনো জায়গা নেই যেখানে আর্থ্রোপোড সদস্য পাওয়া যাবে না। এরা সর্বভূক, মুক্তজীবী বা পরজীবী । এদের চলন, শ্বসন, রক্ত-সংবহন প্রভৃতি তন্ত্রও বৈচিত্র্যময় । আর্থ্রোপোডের সামাজিক জীবন প্রাণিজগতে অনন্য ও বিস্ময়কর নজির স্থাপন করেছে । পঞ্চ ইন্দ্রিয় অত্যন্ত কার্যক্ষম বলে আর্থ্রোপোড সদস্যরা পরিবেশ নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিতে পেরেছে।এ পর্বের পরিচিত প্রাণীরা হলো মৌমাছি,ঘাসফড়িং,তেলাপোকা,চিংড়ি,কাঁকড়া ইত্যাদি।
Phylum পরিচিতি: Mollusca
Mollusca প্রাণিজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম পর্ব । প্রাণীর বর্তমান সংখ্যাগত দিক থেকে Arthropoda পর্বের পরেই এদের অবস্থান। এ পর্বের সদস্যরা অনন্য ধরনের খোলকবাহী ননকর্ডেট প্রাণী । ঝিনুক, শামুক, অক্টোপাস, সেপিয়া,স্কুইড এ পর্বের পরিচিত সদস্য।
Arthropoda ও Mollusca পর্বের প্রাণীদের সাদৃশ্য:
১)উভয়েই অঙ্গ তন্ত্র সংগঠন মাত্রার প্রাণী।
২)ত্রিস্তরী,নন-কর্ডেট,এন্টেরোজোয়া।
৩)উভয়ের সিলোম রক্ত দ্বারা পূর্ণ যা হিমোসিল নামে পরিচিত।
Arthropoda ও Mollusca পর্বের প্রাণীদের বৈসাদৃশ্য:
Arthropoda
Mollusca
১)প্রাণিজগতের বৃহত্তম পর্ব।
১)প্রাণিজগতের দ্বিতীয় বৃহত্তম পর্ব।
২)দেহ অসম খণ্ডায়িত।
২)দেহ অখণ্ডায়িত।
৩)দেহ কিউটিকলে আবৃত।
৩)দেহ ম্যান্টল নামক পাতলা পর্দায় আবৃত।
৪)রক্ত সংবহনতন্ত্র মুক্ত।
৪)রক্ত সংবহনতন্ত্র অর্ধমুক্ত।
৫)এরা একলিঙ্গ।
৫)এরা একলিঙ্গ বা উভলিঙ্গ হয়।
৬)চক্ষু জটিল প্রকৃতির যা পুঞ্জাক্ষি নামে পরিচিত।
৬)চক্ষু সরল প্রকৃতির।
এছাড়া Mollusca প্রাণীদের কিছু অনন্য বৈশিষ্ট্য আছে। যেমন:
এক অবস্থা থেকে অন্য অবস্থায় রূপান্তর লক্ষ করা যায়।
অনুরূপ আরেকটা প্রশ্ন হতে পারে যে প্রাণীজগতের সরলতম পর্বের সাথে সামুদ্রিক পর্বের তুলনা কর।এক্ষেত্রে স্মরণ রাখতে হবে যে,সরলতম পর্ব Porifera এবং সামুদ্রিক পর্ব Echinodermata।
Phylum পরিচিতি:Porifera
প্রাণিদের মধ্যে Porifera পর্বের সদস্যরা প্রাচীনতম ও সরল প্রকৃতির । দেহে অসংখ্য ছিদ্র থাকায় এদের ছিদ্রাল প্রাণী বলে । সাধারণভাবে এরা স্পঞ্জ (sponge) নামে পরিচিত । এরা দেখতে ডাল-পালাযুক্ত গাছ, ফুলদানি, ঘণ্টা বা বালির মতো এবং দৈহিক ব্যাস এক মিলিমিটার থেকে প্রায় দুই মিটার । কারও রং অনুজ্জ্বল ধূসর, আবার কোনটি লাল, কমলা, নীল, বেগুনি প্রভৃতি উজ্জ্বল বর্ণের । অধিকাংশ সামুদ্রিক । কেবলমাত্র Spongilidae গোত্রের প্রাণীরা মিঠাপানির বাসিন্দা।
Phylum পরিচিতি:Echinodermata
সমুদ্র তারার (sea star) ছবির মধ্য দিয়েই Echinodermata পর্ব সবচেয়ে বেশি পরিচিতি পেয়েছে। সমুদ্র তারা ছাড়াও এ পর্বে রয়েছে ব্রিটল তারা, সাগর আর্টিন, সমুদ্র শসা, সমুদ্র পদ্ম প্রভৃতি প্রাণী । কোনোটি গোল, অন্যগুলো শসা বা তারার মতো দেখতে। এসব প্রাণী ত্রিস্তরী, প্রকৃত-সিলোমেট ও অঙ্গ-তন্ত্র মাত্রার গঠন সম্বলিত প্রজাতি। সকল একাইনোডার্ম সদস্য কাঁটাময় ত্বকবিশিষ্ট। ত্বকের নিচে শায়িত চুনময় অন্তঃকঙ্কালিক প্লেট (calcareous endoskeletal plates) থেকে এসব কাঁটা উদগত হয়। কাঁটাগুলো বহিঃকঙ্কাল, আর প্লেটগুলো হচ্ছে অন্তঃকঙ্কাল। এ পর্বের প্রজাতিগুলো অসমোরেগুলেশনে অক্ষম বলে মোহনায় খুব কম পাওয়া যায়, বরং সব সমুদ্রের পৃষ্ঠতল থেকে শুরু করে অতল পর্যন্ত সবখানে বিস্তৃত। গভীর সমুদ্রে একাইনোডার্ম ধরনের প্রাণী বেশি দেখা যায়। মুক্তজীবী ও সহজীবী প্রজাতি থাকলেও পরজীবী একাইনোডার্ম নেই।
Porifera ও Echinodermata পর্বের প্রাণীদের সাদৃশ্য:
উভয়েই জলভাগে বাস করে।
উভয়ের দেহের বাহিরে কাঁটাযুক্ত গঠন বিদ্যমান
উভয়ের দেহে রক্ত সংবহনতন্ত্র অনুপস্থিত।
Porifera ও Echinodermata পর্বের প্রাণীদের বৈসাদৃশ্য: