-->

প্রাণিজগতের সবচেয়ে উন্নত পর্ব হলো কর্ডাটা।

1885 সালে Bateson সর্বপ্রথম এ পর্বের নামকরণ করেন। এ পর্বের শনাক্তকৃত জীবন্ত প্রজাতির সংখ্যা ৬৮,৬২৬টি ৷ যেসব প্রাণীর জীবনে কোন না কোন পর্যায়ে পৃষ্ঠ-মধ্যরেখা বরাবর একটি দণ্ডাকার ও স্থিতিস্থাপক এবং পৃষ্ঠীয় ও ফাঁপা স্নায়ুরজ্জু থাকে তাদের কর্ডাটা বলে।

এদের জীবনের যেকোন পর্যায়ে গলায় কয়েকজোড়া ফুলকা রন্ধ্র (gill slits) থাকে। এদের হৃৎপিণ্ড অঙ্কীয়দেশে অবস্থান করে। দেহের অনুপাতে মস্তিষ্ক সবচেয়ে বড় অঙ্গ এবং করোটির হাড় পাতলা ও বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে উন্নত।

অবস্থান্তর মৌল ও এর ধর্ম

"ইলেকট্রন বিন্যাস পর্যায় সারণির মূল ভিত্তি "
তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের সাতকাহন

সংক্ষিপ্ত পরিচিতি: 

মানুষের কাছে Chordata পর্বের প্রাণীই সবচেয়ে বেশি পরিচিত। ক্ষুদ্রাকায় কাঁচকি থেকে মানুষ পর্যন্ত সব প্রাণী এ পর্বের অন্তর্ভুক্ত। বিবর্তনের ধারাবাহিকতায় আপাতত শেষ প্রান্তে রয়েছে এ পর্ব।পূর্বের সময়কার প্রাণিদের দেহগড়ন বর্তমান পর্যায়ের স্তন্যপায়ীতে এসে যে জটিল রূপ ধারণ করেছে তা সুস্পষ্ট।এর  ঘনিষ্ঠ সম্পর্কিত পর্ব হচ্ছে Echinodermata এবং Hemichordata। অন্তঃকঙ্কাল, ছিদ্ৰাল গলবিল, উন্নত মস্তিষ্ক বিশেষ সংবেদ অঙ্গ ও জোড় উপাঙ্গসমৃদ্ধ এ প্রাণিকূল উৎপত্তির পর দ্রুত পৃথিবীর সমস্ত বাস্তুতন্ত্রে ছড়িয়ে এক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলে। তার ফলশ্রুতিতে সবশেষে মানুষের উদ্ভবের মধ্য দিয়ে পৃথিবী জয় সমাপ্ত হয়েছে।

পর্ব Chordata-র বৈশিষ্ট্য

১. নটোকর্ড :

 ভ্রূণাবস্থায় অথবা আজীবন কর্ডেটের পৃষ্ঠ-মধ্যরেখা বরাবর পৌষ্টিকনালি ও স্নায়ুরজ্জুর মাঝখানে স্থিতিস্থাপক নিরেট নটোকর্ড থাকে । উন্নত প্রাণিদের পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় এটি মেরুদন্ড (vertebral column) দিয়ে প্রতিস্থাপিত হয়। এসব তখন মেরুদণ্ডী প্রাণী (vertebrates) নামে অভিহিত করা হয়।

২. স্নায়ুরজ্জু: 

নটোকর্ডের ঠিক উপরে লম্ব অক্ষ বরাবর ফাঁপা, নলাকার, স্নায়ুরজ্জু (nerve cord) থাকে। উন্নত প্রাণিদের ক্ষেত্রে স্নায়ুরজ্জুটি পরিবর্তিত হয়ে সম্মুখপ্রাস্তে মস্তিষ্ক (brain) ও পশ্চাতে সুষুম্নাকান্ড (spinal chord) গঠন করে।

৩. গলবিলীয় ফুলকা রন্ধ্র :

 জীবনের যে কোনো দশায় বা আজীবন কর্ডেটের গলবিলের দুপাশে কয়েক জোড়া ফুলকারন্ধ্র (gill slits) থাকে (উন্নত কর্ডেটে ফুলকা রন্ধ্র্বের বিলোপ ঘটে)।

৪. এন্ডোস্টাইল :

 গলবিলের নিচে এন্ডোস্টাইল (endostyle) নামক অঙ্গ থাকে, যা পূর্ণবয়স্ক মেরুদণ্ডী প্রাণীতে থাইরয়েড গ্রন্থিতে রূপান্তরিত হয়।

৫. পায়ু-পশ্চাৎ লেজ:

 ভ্রূণ দশায় পায়ুর পশ্চাতে নটোকর্ড বা মেরুদণ্ডে অবলম্বিত পেশল স্থিতিস্থাপক (post-anal tail) থাকে। অনেক ক্ষেত্রে এটিও পরবর্তীতে বিলীন হয়ে যায়।

৬. পরিপাকতন্ত্র সম্পূর্ণ:

এটি মুখছিদ্রে শুরু এবং পায়ুতে শেষ হয়। এতে পাকস্থলি ও অস্ত্র সুস্পষ্টভাবে পৃথক থাকে।

৭. রক্ত সংবহনতন্ত্র: 

কর্ডেটদের রক্ত সংবহনতন্ত্র বদ্ধ ধরনের; অর্থাৎ রক্ত সর্বদা রক্ত বাহিকা ও হৃদযন্ত্রের ভিতর আবদ্ধ থেকেই প্রবাহিত হয়, কখনোই দেহগহ্বরে মুক্ত হয় না। রক্তের লোহিত কণিকায় হিমোগ্লোবিন থাকে। এদের সংবহনতন্ত্রে হেপাটিক পোর্টালতন্ত্র বিদ্যমান।

৮. হৃৎপিণ্ডের অবস্থান: 

কর্ডেটে হৃৎপিন্ড অঙ্কীয়দেশে অবস্থান করে।

৯. পার্শ্বপদ: 

মেরুদন্ডীদের দুজোড়া পার্শ্বপদ থাকে যা অন্তঃকঙ্কালে অবলম্বিত।

১০. খণ্ডকায়ন : 

কর্ডেটের খণ্ডকায়ন দেহপ্রাচীর, মস্তিষ্ক ও লেজে সীমাবদ্ধ থাকে. সিলোম পর্যন্ত পৌঁছায় না।

কর্ডাটা পর্বের শ্রেণিবিন্যাস:

কর্ডাটা পর্বকে 3টি উপপর্বে ভাগ করা হয়:

এ তিনটি পর্বের তুলনা নিম্নরূপ:

Urochordata

Cephalochordata

Vertebrata

১.সাগর ফোয়ারা নামে পরিচিত।

১.বল্লমাকার প্রাণী নামে পরিচিত।

১.মেরুদণ্ডী প্রাণী নামে পরিচিত।

২.লার্ভা দশায় নটোকর্ড থাকে,পূর্ণাঙ্গ অবস্থায় বিলুপ্ত হয়ে যায়।

২.সারাজীবন নটোকর্ড থাকে।

২.নটোকর্ড রূপান্তরিত হয়ে মেরুদণ্ডে পরিণত হয়।

৩.টিউনিসিন আবরণ থাকে।

৩.মায়োটোম পেশি থাকে।

৩.ত্বকের আবরণ থাকে।

৪.সামুদ্রিক।

৪.উপকূলীয় অঞ্চলের নিকটবর্তী সমুদ্রের অংশে বাস করে।

৪.পৃথিবীর সব অঞ্চলে বাস করে।

৫.গলবিলে দুইটি বা অসংখ্য ফুলকারন্ধ্র থাকে।

৫.গলবিলে অসংখ্য ফুলকারন্ধ্র থাকে।

৬.গলবিলে ৫-১৫ জোড়া ফুলকারন্ধ্র থাকে।উন্নত প্রাণীতে ফুলকা ফুসফুসে রূপান্তরিত হয়।

৬. নার্ভকর্ড একটি স্নায়ুগ্রন্থিতে পরিণত হয়।

৬.নার্ভকর্ড অপরিণত মস্তিষ্ক এবং দূর্বল সংবেদী স্নায়ু তৈরি করে।



৬.নার্ভকর্ড পূর্ণাঙ্গ প্রাণীতে মস্তিষ্ক ও সুষুম্নাকাণ্ড গঠন করে।

৭.রক্ত সংবহনতন্ত্র মুক্ত,হৃৎযন্ত্রে reverse peristalsis ঘটে।

৭.রক্ত সংবহনতন্ত্র বদ্ধ, হৃৎযন্ত্রের উপস্থিতি নেই।

৭.রক্ত সংবহনতন্ত্র বদ্ধ প্রকৃতির,

অলিন্দ ও নিলয় বিশিষ্ট হৃৎযন্ত্র বিদ্যমান।




Urochordata পর্বের প্রাণীদের কে আদি কর্ডেট বলা হয়।Urochordata এর দুটি শ্রেণি রয়েছে: Myxini এবং Petrmyzontida.এ দুটি শ্রেণির পার্থক্য নিচে দেয়া হলো:

Myxini

Petromyzon

১.হ্যাগফিশ নামে পরিচিত।

১.ল্যামপ্রে নামে পরিচিত।

২.আবর্জনাভুক,মৃত মাছের টিস্যু থেকে খাদ্য গ্রহণ করে।

২.অর্ধপরজীবী,তবে লার্ভা অবস্থায় মুক্তজীবী।

৩.দেহ পৃষ্ঠীয় পাখনাবিহীন।

৩.দেহ পৃষ্ঠীয় পাখনা যুক্ত।

৪.মুখ প্রান্তে অবস্থিত।

৪.মুখ প্রান্তে অবস্থিত নয়।

৫.লার্ভা দশা থাকে না।

৫.অ্যামোসিট নামক লার্ভা দশা থাকে।

৬.নাসিকাথলি মুখবিবরে উন্মুক্ত।

৬.নাসিকাথলি মুখবিবরে উন্মুক্ত নয়।

৭.মস্তিষ্ক অনুন্নত।

৭.মস্তিষ্ক সুগঠিত ও উন্নত।

৮.তিন জোড়া করোটিক স্নায়ু থাকে।

৮.দশ জোড়া করোটিক স্নায়ু থাকে।

৯.জিহবার উপরে দুসারি ছোট দাঁত থাকে।

৯.জিহবার উপরে এবং মুখগহবরে দুসারি কাঁটাযুক্ত দাঁত থাকে।

১০.লালাগ্রন্থি থাকে তবে এককভাবে।

১০.জোড়ায় জোড়ায় লালাগ্রন্থি থাকে।

১১.গলবিলে ৫-১৫ জোড়া ফুলকাছিদ্র থাকে।

১১.গলবিলে ৭ জোড়া ফুলকাছিদ্র সহ ফুলকা থাকে।

১২.ডিম বৃহদাকৃতির এবং কাঁটাযুক্ত বেলনাকার শক্ত আবরণে আবৃত।

১২.ডিম ক্ষুদ্রাকৃতির এবং কাঁটাযুক্ত আবরণে আবৃত নয়।

১৩.অন্ত্রে সর্পিল কপাটিকা থাকে না।

১৩.অন্ত্রে সর্পিল কপাটিকা থাকে।


আরো দেখতে পারেন:

EMR বর্ণালিগাথা
নিউক্লিয়ার ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ও MRI
স্থান কালের চতুর্মাত্রা
33 সংখ্যাটির বিশেষত্ব কী?

অরবিট ও অরবিটালের পার্থক্য

ট্রান্সক্রিপশন ও ট্রান্সলেশনের পার্থক্য
শ্রেণিবিন্যাসের বিভিন্ন পর্বের তুলনা
রেপ্লিকেশন ও ট্রান্সক্রিপশনের মধ্যে পার্থক্য

-->