-->

  Central dogma of Biology এর অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুটি প্রক্রিয়া হলো DNA রেপ্লিকেশন ও ট্রান্সক্রিপশন।এখানে এদুটি প্রক্রিয়ার বর্ণনা,তাদের মধ্যকার পার্থক্য এবং আরো কিছু অতিরিক্ত তথ্য দেয়া হলো যা শিক্ষার্থীদের শিখন সহায়ক হিসেবে কাজ করবে।

রেপ্লিকেশন কী?

কোষের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো তার DNA। বহুকোষী জীবের দেহ গঠনের জন্য জাইগোট কোষকে বারবার বিভাজিত হতে হয়।জীবের প্রজনন ও সংখ্যাবৃদ্ধির জন্যও কোষ বিভাজিত হয়। একটি কোষ বিভাজিত হয়ে পরিণত হওয়ার আগেই মাতৃকোষের DNA ডাবল হেলিক্সটিকে দুটি ডাবল হেলিক্স-এ পরিণত হতে হয়। কোষ বিভাজনের আগে ইন্টারফেজ পর্যায়ে একটি DNA ডাবল হেলিক্স থেকে দুটি ডাবল হেলিক্স তৈরি হয়। এটিই DNA অণুর রেপ্লিকেশন বা প্রতিপিপন। যে প্রক্রিয়ায় একটি মাতৃ DNA থেকে তার প্রতিরূপ দুইটি DNA উৎপন্ন DNA রেপ্লিকেশন বলে। কোষ চক্রের S ধাপে DNA-এর রেপ্লিকেশন সম্পন্ন হয়। DNA অণুর রেপ্লিকেশন অর্ধসংরক্ষণশীল পদ্ধতিতে (Semi-conservative method)। 

রেপ্লিকেশন প্রক্রিয়া:

1) প্রথমে ORI বিন্দুতে (যে বিন্দুতে রেপ্লিকেশন শুরু হয়) হেলিকেজ এনজাইম যুক্ত হয় যা সূত্রের H বন্ড ভেঙে সূত্র দুটি আলাদা করে। এক্ষেত্রে Y আকৃতির Replication Fork তৈরি হয়।

2.টপোআইসোমারেজ ও ও SSBP (Single Strand Binding Protein) সূত্র দুটিকে আলাদা রাখে। SSBP H-বন্ড গঠনে বাধা দেয়।

3. DNA Polymerase III, 3' প্রান্তে নিউক্লিওটাইড যুক্ত করে। এ প্রক্রিয়া শুরু হয় প্রাইমেজ এনজাইমের কার্যকারিতায়। প্রাইমেজ 3' প্রান্তে কিছু নিউক্লিওটাইড  যুক্ত করে। এ নিউক্লিওটাইডগুলো RNA নিউক্লিওটাইড। নিউক্লিওটাইডের খণ্ডটিকে বলে প্রাইমার।

4.DNA Polymerase III নতুন 5'⇒3' সূত্রটি নিরবচ্ছিন্নভাবে তৈরি করে। কিন্তু  নতুন 3'→5'  সূত্রটি খণ্ড খণ্ডভাবে তৈরি হয়। নতুন 3' → 5' সূত্রটি বিপরীত দিক থেকে তৈরি হয়। প্রত্যেকটি খন্ডকে Okazaki খন্ড বলে।

 5. DNA Polymerase I প্রাইমারের RNA নিউক্লিওটাইডগুলোকে DNA নিউক্লিওটাইড দ্বারা প্রতিস্থাপন করে।

6.DNA লাইগেজ এনজাইম Okazaki খন্ডগুলোকে যুক্ত করে।

ট্রান্সক্রিপশন কী?

ট্রান্সক্রিপশন হলো DNA নির্দেশিত RNA সংশ্লেষণ। DNA বেস সিকোয়েন্স কপি করে mRNA সংশ্লেষণ প্রক্রিয়া হলো ট্রান্সক্রিপশন। সহজ কথায় DNA থেকে mRNA তৈরির প্রক্রিয়া হলো ট্রান্সক্রিপশন। ট্রান্সক্রিপশনের মাধ্যমে DNA কোড, RNA কোড হিসেবে রাসায়নিকভাবে পুনঃলিখিত হয়।

DNA হলো ডাবল স্ট্র্যান্ড কিন্তু RNA হলো একক স্ট্র্যান্ডবিশিষ্ট। তাই ট্রান্সক্রিপশন হবে ডাবল স্ট্যান্ডের পরিবর্তে একক স্ট্র্যান্ডে। যে স্ট্র্যান্ডকে ছাঁচ (template) হিসেবে ব্যবহার করে ট্রান্সক্রাইব করা হবে সেই স্ট্র্যান্ডকে বলা হয় template, antisense strand বা non-coding strand। অপর স্ট্র্যান্ডটিকে (যে স্ট্র্যান্ড থেকে ট্রান্সক্রাইব হবে না) বলা হয় কমপ্লিমেন্টারি স্ট্র্যান্ড, sense strand বা coding strand, কারণ DNA অণুর এই স্ট্যান্ডের বেস সিকোয়েন্স আর নতুনভাবে mRNA অণুর বেস সিকোয়েন্স হবে হুবহু একই রকম, কেবল T এর হলে U হবে। ট্রান্সক্রিপশনের মাধ্যমে জিন-এর যে অংশটুকু mRNA অণুতে রূপান্তরিত হবে ঐ অংশটুকুই হলো ট্রান্সক্রিপশন ইউনিট।

ট্রান্সক্রিপশন প্রক্রিয়া:

1.Transcription প্রক্রিয়া DNA এর জিন অংশে ঘটে। প্রতিটি জিনের শুরুতে থাকে প্রোমোটার যা প্রক্রিয়া শুরু করে এবং শেষে থাকে Terminatore যা এটি শেষ করে।

2. এ প্রক্রিয়ার শুরুতে Transcription factor Promoter  এ এসে যুক্ত হয়। এরপর RNA পলিমারেজ এনজাইম  Promoter এবং Transcription Factor এর সাথে যুক্ত হয়।

3. RNA polymerase এনজাইম প্রোমোটারের পর থেকে দ্বিসূত্রক DNA এর H, বন্ধন ভেঙে ফেলে এবং সূত্র দুটিকে আলাদা করে। প্রোমোটারের পর 5'⇒3 ' সূত্রকে বলে কোডিং সূত্র এবং 3'⇒5 'সূত্রকে বলে নন কোডিং সূত্র।

4. RNA polymerase 3'→5' কে Template হিসেবে ধরে 5'→3' এর দিকে নতুন m - RNA গঠন করে। Terminator এ গিয়ে প্রক্রিয়াটি সমাপ্ত হয়।

5. নতুন সৃষ্ট m-RNA কে বলে প্রি-mRNA যার 5' প্রান্তে ক্যাপিং ঘটে এবং 3' প্রান্তে টেইলিং ঘটে। প্রি m -RNA এর কিছু অংশ যারা ট্রান্সলেশন প্রক্রিয়ায় অংশ নেয় না তাদেরকে Intron বা নন কোডিং অংশ বলে। যারা অংশ নেয় তাদেরকে Exon বা কোডিং অংশ বলে। 6.স্প্লাইসিওজোম, স্প্লাইসিং পদ্ধতিতে Intrron গুলোকে বাদ দেয় এবং Exon গুলো নিয়ে চূড়ান্ত m-RNA তৈরি হয় যা ট্রান্সলেশনে অংশ নেয়।

রেপ্লিকেশন ও ট্রান্সক্রিপশনের পার্থক্য:

DNA রেপ্লিকেশন

ট্রান্সক্রিপশন

১)একটি DNA হতে আরো দুইটি DNA তৈরির প্রক্রিয়া।

১) DNA হতে mRNA তৈরির প্রক্রিয়া।

২)DNA এর দুইটি সূত্র টেম্পলেট হিসেবে কাজ করে।

২)প্রোমোটারের পর 3'-5' সূত্র টেম্পলেট হিসেবে কাজ করে।

৩)DNA এর ডাবল হেলিক্সের H বন্ড ভাঙতে হেলিকেজ এনজাইম কাজ করে।

৩)DNA এর ডাবল হেলিক্সের H বন্ড ভাঙতে RNA পলিমারেজ এনজাইম কাজ করে।

৪)প্রাইমার লাগে।

৪)প্রাইমার লাগে না।

৫)DNA নিউক্লিওটাইড প্রয়োজন হয়।

৫)RNA নিউক্লিওটাইড প্রয়োজন হয়।


৬)কোষ চক্রের S দশায় ঘটে।

৬)কোষ চক্রের G1 ও G2 দশায় ঘটে।

৭)DNA পলিমারেজ এনজাইম মুখ্য ভূমিকা পালন করে।

৭)RNA পলিমারেজ এনজাইম মুখ্য ভূমিকা পালন করে।

৮)DNA এর বহু স্থানে একই সাথে ঘটে।

৮)শুধুমাত্র DNA এর জিন অংশে ঘটে।

৯)অংশগ্রহণকারী প্রোটিন ও এনজাইম কে একত্রে রেপ্লিকেশন কমপ্লেক্স বলে।

৯)অংশগ্রহণকারী প্রোটিনগুলোকে একত্রে ট্রান্সক্রিপশন ফ্যাক্টর বলে।

আদিকোষ ও প্রকৃতকোষে ট্রান্সক্রিপশনের পার্থক্য:

আদিকোষ

প্রকৃত কোষ

১)DNA এর সমগ্র অংশে ঘটে।

১)DNA এর জিন অংশে ঘটে। 

২)নিউক্লিওটাইডের সংযুক্তি দ্রুত হয়।

২)নিউক্লিওটাইডের সংযুক্তি অপেক্ষাকৃত ধীর হয়।

৩)ইন্ট্রন থাকে না।

৩)ইন্ট্রন ও এক্সন উভয়ই থাকে।

৪)কোনো প্রি mRNA সৃষ্টি হয় না।

৪)প্রি mRNA সৃষ্টি হয়। 

আরো দেখুন:

অবস্থান্তর মৌল ও এর ধর্ম
"ইলেকট্রন বিন্যাস পর্যায় সারণির মূল ভিত্তি "
তেজস্ক্রিয় আইসোটোপের সাতকাহন
EMR বর্ণালিগাথা
নিউক্লিয়ার ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ও MRI
স্থান কালের চতুর্মাত্রা
33 সংখ্যাটির বিশেষত্ব কী?

অরবিট ও অরবিটালের পার্থক্য

ট্রান্সক্রিপশন ও ট্রান্সলেশনের পার্থক্য
শ্রেণিবিন্যাসের বিভিন্ন পর্বের তুলনা



-->